খতিয়ান ও দাগের তথ্য অনুসন্ধান করা খুব জরুরি একটি কাজ। আমরা দুই ভাবে খতিয়ান ও দাগের তথ্য অনুসন্ধান করতে পারি। জেলা ভূমি মন্ত্রণালয়ের কার্যালয় থেকে অথবা ঘড়ে বসে অনলাইনে মোবাইলের মাধ্যমে।
আরও পড়ুনঃ নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করুন
আপনি চাইলে এখন আর কোন রকম সময় কষ্ট না করে ঘড়ে বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাত্র ১০ মিনিট সময় দিয়ে যে কোন ধরনের খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে পারবেন, যেমন – আর এস খতিয়ান, সি এস খতিয়ান, বি আর এস খতিয়ান, এস এ খতিয়ান।
আরও পড়ুন আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করার সহজ নিয়ম
তবে আপনি যদি জেলা ভূমি মন্ত্রণালয়ের কার্যালয় থেকে খতিয়ান অনুসন্ধান করতে চান তাহলেও পারবেন।
একেত্রে আপনাকে কিছু করতে হবেনা, প্রয়োজনিয় তথ্য এবং নির্দারিত টাকা মজা দিলেই কিছু দিনের মধ্যে খতিয়ান পেয়ে যাবেন।
আরও পড়ুনঃ ই নামজারি খতিয়ান যাচাই করার সহজ নিয়ম
এই আর্টিকেল-এ আমরা দেখব কিভাবে খতিয়ান/পর্চা ও দাগের তথ্য অনুসন্ধান করতে হয়।
Contents
খতিয়ান/পর্চা কি? খতিয়ান অনুসন্ধান।
সহজ করে বলতে গেলে বলা যায় যে খতিয়ান বা পর্চা একটা জমি কিংবা দাগ নাম্বারের মালিকানা প্রমান করে।
একটা খতিয়ানে একাদিক দাগ নাম্বার থাকতে পারে। জমি ক্রয় কিংবা বিক্রয় করার কেত্রে খতিয়ান/পর্চা প্রয়োজন হয়।
আপনার একটা জমি আছে কিন্তু সেই জমির দাগ নাম্বারের মালিক অন্য মানুষের নামে আছে খতিয়ান/পর্চা তে, এই রকম হলে আইনত ভাবে আপনি জমির মালিক নন।
আইনত ভাবে জমির মালিক হতে হলে নিশ্চয়ই খতিয়ান বা পর্চা তে আপনার নামে দাগ নাম্বারটি রেকর্ড থাকা লাগবে।
খতিয়ান ও দাগের তথ্য অনুসন্ধান করার নিয়ম | খতিয়ান অনুসন্ধান
খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করার জন্য আমাদের কিছু তথ্য প্রয়োজন হবে। তাহলেই আমরা খুব সহজে বাংলাদেশ ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে মোবাইল ফোনের সাহায্যে মাত্র ৫-১০ মিনিট সময় দিয়ে খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারব।
অনুসন্ধান করার পর চাইলে সেখান থেকে নির্দারিত মাত্র ১০০ টাকা ফী দিয়ে খতিয়ান/পর্চা ডাউনলোড করতে পারব। তবে আমরা এই আর্টিকেল-এ শুধু মাত্র খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করা দেখব।
আপনি যদি খতিয়ান/পর্চা ডাউনলোড করতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটির শেষের অংশে যান সেখানে জমির খতিয়ান ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। জমির খতিয়ান ডাউনলোড করার নিয়ম
খতিয়ান অনুসন্ধান করার জন্য যে তথ্য গুলো প্রয়োজন তা হলোঃ
- বিভাগ – জেলা – উপজেলা।
- খতিয়ানের ধরন – মৌজা – খতিয়ান নং
এই অল্প কিছু তথ্য দিয়ে আমরা খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারব।
খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান মাত্র ৫ মিনিটে
খতিয়ান ও দাগের তথ্য অনুসন্ধান করার নিয়ম আমরা ধাপে ধাপে সাজিয়েছি, নির্ভুল ভাবে খতিয়ান অনুসন্ধান করতে আমাদের দেখানু ধাপ গুলো অনুস্মরণ করুন।
ধাপ ১– সর্বপ্রথম বাংলাদেশ ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটর লিঙ্ক এখান থেকে কপি করে যে কোন একটা ব্রাউজার-এ গিয়ে ওয়েবসাইট-এ প্রবেশ করুন এবং সার্ভে খতিয়ান অপশন-এ ক্লিক করুন। ওয়েবসাইট লিঙ্কঃ https://eporcha.gov.bd/
ধাপ ২– বিভাগ অপশন থেকে আপনার জমি যেই বিভাগে আছে সেই বিভাগ বাছাই করুন। মনে রাখবেন এখানে আপনার বিভাগ কিংবা জেলা, উপজেলার নাম দিলে হবেনা।
জমি যেই বিভাগে আছে সেই বিভাগ এবং অন্যান্য দিতে হবে। যেমন আপনার বাড়ি ডাকা বিভাগে কিন্তু আপনার জমি আছে সিলেট বিভাগে। যেহেতু আপনার বিভাগ সিলেট বিভাগে আছে তাই আপনি সিলেট নির্বাচন করবেন।
ধাপ ৩– জেলা অপশন থেকে আপনার জমির জেলা নির্বাচন করুন।
ধাপ ৪– উপজেলা অপশন থেকে আপনার জমির উপজেলা নির্বাচন করুন। কেয়াল রাখতে হবে এখানে যেন কোন ভুল না হয়। একটি ভুল হলেই খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন না।
ধাপ ৫– তারপর এখানে খতিয়ানের ধরন নির্বাচন করুন, এখানে আপনি যে কোন খতিয়ানের ধরন নির্বাচন করতে পারেন, তবে হ্যাঁ আপনি যেই খতিয়ানের ধরন নির্বাচন করবেন সেই খতিয়ানের নাম্বার প্রয়োজন হবে।
আপনি যদি সি এস খতিয়ান নির্বাচন করেন তাহলে আপনার সি এস খতিয়ানের নাম্বার প্রয়োজন হবে। আর এস খতিয়ান নির্বাচন করলে আর এস খতিয়ানের নাম্বার প্রয়োজন হবে।
আপনার যেই খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করা প্রয়োজন সেই খতিয়ান/পর্চা বেছে নিন।
ধাপ ৬- আপনার জমি যেই আরিয়াতে বা মৌজা তে আছে সেটা খুজে নিন, এখানে নিশ্চয়ই সঠিক মৌজা নির্বাচন করতে হবে।
ধাপ ৭– একদম শেষের এই ধাপে আপনার খতিয়ান/পর্চা নং দিয়ে “খুজুন” বাটনে ক্লিক করার পরেই উক্ত খতিয়ানের মধ্যে থেকে দাগ নাম্বার গুলো দেখতে পারবেন এবং মালিকের নাম এবং অন্যান্য তথ্য দেখতে পারবেন।
অন্যান্য তথ্য | খতিয়ান ও দাগের তথ্য অনুসন্ধান | খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান
এই অনুসন্ধানের সাহায্যে আপনি জানতে পারবেন জমি কোন বেক্তির নামে রেকর্ড করা আছে এবং খতিয়ানে থাকা দাগ নাম্বার গুলো জানতে পারবেন।
এখন আপনি যদি খতিয়ানটি ডাউনলোড করতে চান তাহলে আপনার আরও কিছু তথ্য প্রয়োজন হবে এবং ১০০ টাকা ফী দিতে হবে।
খতিয়ান ডাউনলোড করার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং শেষ অংশে যান সেখানে জমির খতিয়ান ডাউনলোড করার নিয়ম সেখানো হয়েছে।
বলে রাখা ভালো এখান থেকে খতিয়ান/পর্চা ডাউনলোড করে সকল জায়গায় ব্যাবহার করা যাবেনা। যেমন – একটা জমি রেজিস্টার করতে হলে অরিজিনাল খতিয়ান/পর্চা প্রয়োজন হয়।
এই কেত্রে আপনার ডাউনলোড ক্রিত এই খতিয়ানটি কাজে লাগবেনা বা এটা দিয়ে হবেনা।
শেষ কথাঃ
খতিয়ান ও দাগের তথ্য অনুসন্ধান করার এই পদ্ধতিতে যদি আপনার খতিয়ানটি খুজে না পান তাহলে বুজতে হবে আপনার খতিয়ানটি এখনো অনলাইন করা হয়নি।
আপনার খতিয়ান যদি অনলাইন করা না থাকে তাহলে এটা অনুসন্ধান করতে পারবেন না।
তাছাড়া এটি পুরপুরি বাংলাদেশ ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট হওয়ায় এখানে যদি কোন তথ্য ভুল দেখায় সেকেত্রে আমরা দায়ি নয়।
আমাদের এই আর্টিকেল যদি আপনার কাজে আছে অথবা নতুন কিছু শিখতে পারেন তাহলে আপনার কাছে একটি কমেন্ট এবং একটি শেয়ার আশা করি।