কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম – কৃষি ব্যাংক বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষদের লোন দিয়ে থাকে। কৃষি ব্যাংক সকল ধরনের শস্য খ্যাঁতে লোন প্রধান করে থাকে। আপনার যদি নিজের একটি জমি থাকে আর সেই জমিতে চাষ করার জন্য আপনার টাকা প্রয়োজন হয় তাহলে কৃষি ব্যাংক আপনাকে লোন দিবে।
আরও পড়ুন ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি
কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি মূলত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কৃষকদের লোন দিয়ে থাকে। আপনার যদি কাজ জানা থাকে এবং আপনার নামে একটি জমি থাকে, যেই জমিতে চাষ করবেন সেই জমি আপনার নামে হতে হবে বা অন্য কোন সম্পত্তি থাকতে হবে যার বিনিময়ে কৃষি ব্যাংক আপনাকে লোন দিবে।
আরও পড়ুন গ্রামে বাড়ি করার জন্য ব্যাংক লোন নিন সহজে
কৃষি ব্যাংক তাদের লোন সিস্টেমকে তিনটি বাগে আলাদা করেছে, তাই আজকে আমরা জানব কৃষি ব্যাংকের তিনটি লোন কি কি ? কাদেরকে লোন দিচ্ছে কিংবা লোন আপনি পেতে হলে আপনার কি কি প্রয়োজন হবে? কৃষি ব্যাংকে সুদের হার কত % দিতে হয়।
আরও পড়ুন বেকারদের ৫ লক্ষ্য টাকা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
Contents
- 1 কৃষি ব্যাংক থেকে লোন প্রাপ্তির যোগ্যতা | কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম
- 2 কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি গুলো | কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম
- 3 কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে প্রয়োজনিয় কাগজপত্র
- 3.1 শস্য ঋণ পেতে প্রয়োজনিয় কাগজপত্র | কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি
- 3.2 মেয়াদি ঋণের কেত্রে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হবে
- 3.3 স্বল্প মেয়াদী ঋণের বৈশিষ্ট্য, ঋণের খ্যাঁত এবং সুদের হার | Krishi Bank Loan
- 3.4 মধ্যম মেয়াদী ঋণের বৈশিষ্ট্য, ঋণের খ্যাঁত এবং সুদের হার | Krishi Bank Loan
- 3.5 দীর্ঘ মেয়াদী ঋণের বৈশিষ্ট্য, ঋণের খ্যাঁত এবং সুদের হার | Krishi Bank Loan
- 4 উপসংহার
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন প্রাপ্তির যোগ্যতা | কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পেতে হলে আপনার মিনিমাম কিছু যোগ্যতা থাকা লাগবে শুধু মাত্র কৃষি ব্যাংক না সকল ব্যাংকই তাদের লোন গ্রহীতাদের কিছু যোগ্যতা ছাড়া লোন দেয়না।
লোন প্রাপ্তির এই যোগ্যতা গুলো তিন ধরনের লোনের কেত্রেই লাগবে (কিছু কম বেশি যোগ্যতা লাগতে পারে)
তু চলোন দেখে নেওয়া যাক কি কি যোগ্যতা থাকলে কৃষি ব্যাংক আপনাকে লোন দিবেঃ
- আপনাকে অবশ্যই কৃষক হতে হবে। তবে আপনি যদি কৃষক না হন তাহলে অন্তত কৃষি কাজের সাথে সরাসরি জরিত থাকতে হবে।
- কৃষি ব্যাংক থেকে যদি আপনি এর আগে লোন নিয়ে থাকেন এবং ঠিক মত পরিসোদ না করেন তাহলে আপনাকে লোন প্রাপ্তির জন্য অযোগ্য বিবেচনা করা হইবে।
- আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং ভোটার আইডি কার্ড থাকা লাগবে। পাসপোর্ট থাকলেও হবে।
- কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য আপনার বয়স ২১ বছরের বেশি হতে হবে।
- লোন পরিসোদ করতে পারবেন এই পরিমান ইনকাম থাকা লাগে কিংবা আপনার নমিনির লোন পরিসোদ করার মত সম্পত্তি থাকতে হবে।
- একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে সেটায় টাকা ইনভেস্ট করলে ভালো।
- আপনি যদি দেউলিয়া হন মানে আপনার বাড়ি ঘড় নেই এবং আপনি ঋণে জর্জরিত হয়ে আছেন তাহলে ব্যাংক আপনাকে অযোগ্য বিবেচনা করবে।
কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি গুলো | কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম

আমরা ইতি মধ্যেই জানিয়েছি যে কৃষি ব্যাংক তাদের লোনকে তিন ভাগে আলাদা করেছে, সেগুলো গুলোঃ
- স্বল্প মেয়াদী ঋণ
- মধ্যম মেয়াদী ঋণ
- দির্ঘ মেয়াদী ঋণ
এই তিনটি ঋণের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই, তবে লোন গুলোর সময়কালে রয়েছে পার্থক্য। কিন্তু এই লোন গুলোর বাহিরেও কৃষি ব্যাংকের আরও কিছু লোন আছে।
তবে আমরা শুধু এই লোন গুলো নিয়ে কথা বলব।
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে প্রয়োজনিয় কাগজপত্র
কৃষি ব্যাংক লোন এর জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে তা আমরা দু’ভাগে আলাদা করব।
প্রথমে দেখব শুধু মাত্র শস্য খ্যাঁতের জন্য ঋণ নিতে কি কি কাগজপত্র লাগবে।
শস্য ঋণ পেতে প্রয়োজনিয় কাগজপত্র | কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি

- শস্য ঋণের জন্য প্রথমেই লাগবে আপনার ভোটার আইডি কার্ড।
- তারপর লাগবে আপনার দু’কপি নতুন ছবি।
- আপনার এলাকার চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে।
- শুধু মাত্র শস্য খ্যাঁতের জন্য কোন প্রকার জমির দলিল প্রয়োজন হবেনা।
মেয়াদি ঋণের কেত্রে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হবে
মধ্যম মেয়াদী ঋণ, দির্ঘ মেয়াদী ঋণ এবং স্বল্প মেয়াদী ঋণের ক্ষেত্রে যে সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট লাগে।
- আপনার অথবা আবেদনকারীর দু’কপি ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
- আপনার অথবা আবেদনকারীর দু’কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি দিতে হবে।
- আপনার এলাকার চেয়ারম্যান মহাশয় প্রাপ্ত সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে অথবা নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট।
- আপনি যেই জমির মাধ্যমে লোন নিবেন সেই জমির খতিয়ান জমা দিতে হবে।
- জমির খাযনা জমা দিতে হবে, অবশ্যই খাযনা পরিসোদ করার রসীদ সহ দিতে হবে।
- আপনার জমিটা যদি নিলামের মাধ্যমে কিনে থাকেন তাহলে খাজনার দাখিলা সহ আগের দখল দারির সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে।
- আপনার এই জমি যদি পূর্ব পুরুষের মধ্য থেকে পেয়ে থাকেন তাহলে মূল খতিয়ান প্রয়োজন হবে।
- আপনার জমি যদি ক্রয় করা হয়ে থাকে তাহলে ভায়া দলিল, মূল দলিল, খারিজ খতিয়ান এবং মৌজা ম্যাপের ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
- অথবা আপনার যদি ইজারার মাধ্যমে পেয়ে থাকেন তাহলে খাযনার দাকিলাসহ হেবাপত্র বা দানপত্র লাগবে।
স্বল্প মেয়াদী ঋণের বৈশিষ্ট্য, ঋণের খ্যাঁত এবং সুদের হার | Krishi Bank Loan

স্বল্প মেয়াদি ঋণের বেশির ভাগ খ্যাঁতই হচ্ছে শস্য খ্যাঁত
আপনার যদি কোন ফসল চাষ করার জন্য কিছুদিনের জন্য ঋণ প্রয়োজন হয় যেমন ১ বছর থেকে ১৮ মাসের জন্য তাহলে আপনি মাত্র কয়েকটা ডকুমেন্ট জমা দিয়ে খুব সহজে শস্য ঋণ নিতে পারবেন।
খ্যাঁত সমূহঃ কৃষি ব্যাংক স্বল্প মেয়াদি ঋণ ভিবাগে যে সকল খ্যাঁত রয়েছে তা হলোঃ ভুট্টা, পাট, ডাল/শীতকালীন শাকসবজি, রেণু উৎপাদন, মৎস্যচাষ, চিংড়ি চাষ, বোরো (ধান), রোপা আমন (ধান),
আখ, আলু, বাদাম/সরিষা, গম, আউশ/বোনা আমন, পাট, তিল/গ্রীষ্মকালীন শাক সবজী, লবণ চাষ , একুয়াকালচার, শস্যগুদাম ও বাজারজাতকরণ, আদা/কচু, তুলা, কলাচাষ ও বিবিধ।
এই ঋণ নিতে হলে আপনার তেমন কোন কাগজপত্র লাগবেনা মাত্র ৪ থেকে ৫ টা সাধারন কাগজপত্র জমা দিলেই এই ঋণ খুব সহজে পেয়ে যাবেন।
এমনকি এই ঋণ নিতে প্রয়োজন হবেনা কোন দলিলের বা জমা রাখতে হবেনা কোন জায়গা জমিনের দলিল।
স্বল্প মেয়াদি এই ঋণ ১ বছর থেকে ১৮ মাসের জন্য দেওয়া হয়। স্বল্প মেয়াদি ঋণের প্রায় সকল খ্যাঁতে সুদ দিতে হয় ৮ শতাংশ।
মধ্যম মেয়াদী ঋণের বৈশিষ্ট্য, ঋণের খ্যাঁত এবং সুদের হার | Krishi Bank Loan

মধ্যম মেয়াদি ঋণের খ্যাঁত গুলোঃ গরু, গ্রামিন যানবাহন, ফল বাগান, রেশম চাষ, সেচ কর্মসূচি, পুকুরে মৎস্য চাষ, চিংড়ি চাষ ( তবে প্রকল্প আকারে করতে হবে),
সামুদ্রিক মৎস্য চাষ, কৃষি যন্ত্রপাতি, খামার যন্ত্রপাতি, গাভী পালন, হাঁস মুরগী পালন, ছাগল পালন, গরু মোটাতাজাকরণ, হাঁসের খামার, কুটির শিল্প, তাঁত শিল্প, পল্লী বিদ্যুতায়ন।
মধ্যম মেয়াদি এই ঋণ গুলো নিতে হলে আমাদের উপরে বলা প্রয়োজনিয় কাগজপত্র গুলোর মধ্যে প্রায় সব গুলোই লাগবে, কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম এর এই লোনটি সর্বোচ্চ ৫ বছরের জন্য নিতে পারবেন।
এই খ্যাঁত গুলোর মধ্যে অনেকে গুলোই আছে শস্য খ্যাঁত সেগুলোতে সুদ দিতে হবে ৮ শতাংশ এবং শস্য খ্যাঁত ছাড়া অন্য সকল খ্যাঁতে ৯ শতাংশ সুদ প্রধান করতে হবে।
দীর্ঘ মেয়াদী ঋণের বৈশিষ্ট্য, ঋণের খ্যাঁত এবং সুদের হার | Krishi Bank Loan

দীর্ঘ মেয়াদী ঋণের খ্যাঁত গুলোর মধ্যে রয়েছে দুগ্ধ খামার, হাঁস মুরগীর কামার, গবাদি পশুর খামার, মৎস্য খামার, ফলের বাগান, কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন, চা বাগান, রাবার চাষ অথবা রাবার বাগান।
দীর্ঘ মেয়াদী ঋণের জন্য ৫ বছরের বেশি সময়ের জন্য ঋণ প্রধান করা হয়ে থাকে। এই ঋণের সময়কাল ঋণের খ্যাঁতের উপর নির্ভর করে কম বেশি হয়।
দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ গুলোর জন্য ৯ শতাংশ সুদ দেওয়া লাগবে। তবে পূর্বের মত এই দীর্ঘ মেয়াদী ঋণেও যে সকল শস্য খ্যাঁত রয়েছে সেগুলোর জন্য সুদ দিতে হবে ৮ শতাংশ।
উপসংহার
কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম – এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা বুজতে পারলাম যে কৃষি ব্যাংক লোন প্রদ্ধতি আমাদের কৃষকদের লোন পাওয়ার বিষয়টা অনেক সহজ করে দিয়েছে এবং সুদের হাঁর অন্য খ্যাঁতের তুলনায় কম।
তবে আমি একজন মুসলমান হিসাবে লোনকে কখনো সাপোর্ট করিনা। এবং আমার এই আর্টিকেল পড়া সকল ভাই-বোনদের লোন না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
আমারা আপনার থেকে একটি কমেন্ট অথবা শেয়ার আশা করি।